মেডিটেশন, মোরাকাবা, জয়েন্ট হিলিং, জয়েন্ট প্রেয়ারের উপর আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত একজন সাধক হচ্ছেন জনাব সাঈদ রহমান। বাংলাদেশে এবং দেশের বাহিরে এ পর্যন্ত তিনি দশ লক্ষাধিক মানুষকে মোটিভেশনাল ট্রেনিং এর মাধ্যমে প্রশিক্ষিত করেছেন। সেই সুত্রে তিনি একজন ইন্টারন্যাশনাল মোটিভেটর হিসেবে পরিচিত। তিনি ১৯৯২ সাল থেকে নিয়মিত ধ্যান সাধনা করে আসছেন। ২০১১ সালে জনাব সাঈদ রহমান মানব কল্যাণে নিয়মিত প্রার্থনা করার জন্য একটা হিলিং গ্রুপ সৃষ্টি করেন, যার নাম হচ্ছে দ্যা কসমিক হিলার। মানব কল্যাণে নিবেদিত এই গ্রুপের কার্যক্রমকে পরিচালনা করার জন্য সে বছরই তিনি প্রতিষ্ঠা করেন দ্যা কসমিক হিলারস ফাউন্ডেশন।
১৭৫ জন হিলার নিয়ে ২০১১ সালের ২১ জানুয়ারি কসমিক হিলারের প্রথম ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয় রাজধানীর ভিক্টোরিয়া হোটেলের কনফারেন্স রুমে। প্রথম দিকে প্রত্যেক সপ্তাহে একদিন এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হতো। সেই সাথে প্রত্যেকদিন রাত ১০ টা থেকে সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত অংশগ্রহণকারী সবাই নিজ নিজ বাসায় থেকে পৃথিবীর কল্যাণের জন্য নিয়মিত প্রার্থনা করে তার রিপোর্ট পেশ করতেন।
মাঝখানে এই সম্মিলিত প্রার্থনা বন্ধ থাকলেও ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী করোনার ভয়াল থাবা শুরু হলে সে থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে আবার এই সম্মিলিত প্রার্থনার প্রোগ্রাম শুরু হয়। এসময় অনলাইন মিটিং প্ল্যাটফর্ম জুমের মাধ্যমে বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্ত্ররাজ্য, কানাডা, ব্রাজিল, তুরস্ক, কুয়েত, কাতারসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অসংখ্য পার্টিসিপেন্ট উক্ত সম্মিলিত প্রার্থনায় অংশগ্রহণ করতে থাকেন। ২৫ মার্চ থেকে ২৭ মে ২০২০ পর্যন্ত নিরবিচ্ছিন্নভাবে প্রত্যেকদিন রাত ৯ টায় করোনামুক্ত সুন্দর ও স্বাভাবিক পৃথিবীর জন্য এই সম্মিলিত প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হতো। ফলাফল হিসেবে করোনায় বাংলাদেশে অপেক্ষাকৃতভাবে অনেক কম মৃত্যু হার পরিলক্ষিত হয়। এসময় আরেক সাধক জনাব এম মিজানুর রহমান কসমিক হিলারস টিমের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বর্তমানে প্রত্যেক বুধবার জুমের মাধ্যমে এই স্পেশাল জয়েন্ট হিলিং গ্রুপের সাপ্তাহিক ওয়ার্কশপ ও মেডিটেশনের প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
২০২০ সালের রমজান মাসে মাতৃভাষায় বুঝে বুঝে পবিত্র কোরআন স্টাডি করার জন্য তৈরি হয় কোরআনের আলো গ্রুপ। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী গোলাম সারোয়ার মিলনের নেতৃত্বে উক্ত কোরআনের আলো গ্রুপের প্রত্যেক সদস্য নিজ নিজ বোধগম্য ভাষায় কোরআন পড়ে তার আলোকে নিজেদের জীবন গড়ার প্রচেষ্টায় ব্রতী হয়েছেন। এখন পর্যন্ত এই কোরআন স্টাডি গ্রুপ থেকে মাতৃভাষায় পাঁচবার পবিত্র কোরআন বুঝে বুঝে পড়ার পাঠচক্র সম্পন্ন হয়েছে। সহসাই ৬ষ্ঠ পাঠচক্র শুরু হতে যাচ্ছে। বর্তমানে প্রত্যেক বৃহস্পতিবার জুমের মাধ্যমে মাতৃভাষায় কোরআন চর্চার এই গ্রুপের সাপ্তাহিক অনলাইন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সুশিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। আজকের শিশু আগামী পৃথিবীর নেতা। তাই কোরআনের শিক্ষার আলোয় ভবিষ্যৎ পৃথিবীকে আলোকিত করে তোলার লক্ষ্যে ৮ থেকে ১৮ বছরের শিশুদেরকে নিয়ে ২০২০ সালের জুন মাসে গঠিত হয় শিশুদের মাতৃভাষায় কোরআন চর্চার প্ল্যাটফর্ম কোরআনের আলো; দ্যা ওয়াইজ ম্যান অব টুডে গ্রুপ। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোঃ মনির হোসেনের নেতৃত্বে কোরআনের পাখীদের উক্ত কোরআন চর্চা প্ল্যাটফর্মে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে শিশুরা অংশগ্রহণ করে যাচ্ছে।
পবিত্র কোরআন স্টাডি পাঠচক্র থেকে আমরা পরিষ্কারভাবে দেখতে পেলাম মহান রব তাঁর পবিত্র কালামে সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দিয়েছেন বিশ্বাস এবং সৎকর্মের উপর। সৎকর্মের মধে নিজের অর্জিত অর্থ থেকে মানব কল্যাণে দান করাকে ধর্মের দুর্গ হিসেবে আখ্যায়িত করে এই কাজকে সবচেয়ে কষ্টসাধ্য কাজ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। সেই কষ্টকর কাজে অর্থাৎ অর্থ দিয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করার অভ্যাস গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গড়ে তোলা হয় অলাভজনক দাতব্য সংগঠন ‘হ্যান্ডস ফর হিউম্যানিটি’। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোঃ মনির হোসেনের নেতৃত্বে উক্ত দাতব্য সংগঠন থেকে নিয়মিতভাবে মানব কল্যাণে বিভিন্ন কর্মসূচী পালিত হচ্ছে। কসমিক হিলারের কার্যক্রমকে বিশ্বব্যাপি সম্প্রসারণ করার লক্ষ্যে ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে লন্ডন প্রবাসী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জনাব শামসুল আলম মুরাদের নেতৃত্বে গঠিত হয় কসমিক হিলারস গ্লোবাল টিম। লন্ডন টাইম প্রত্যেক রবিবার সকাল ১০ টায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অংশগ্রহণকারীরা সংযুক্ত হয়ে নিয়মিত কোরআন চর্চা ও ধ্যান চর্চা করে যাচ্ছেন।